পাবনায় চাঞ্চল্যকর ট্রিপল হত্যা মামলায় ঘাতকের ৩বার মৃত্যুদন্ডের আদেশ।
আগস্ট ২৫, ২০২৫

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ঘাতক তানভীর
পাবনায় চাঞ্চল্যকর ট্রিপল হত্যা মামলায় ঘাতক তানভীর হোসেনকে ৩ বার মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। রায়ে আদালত বলেন একবার মৃত্যুদন্ড দেওয়া গেলেও অন্য ২ বারের জন্য ৫০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে। সোমবার (২৫ আগস্ট) দুপুরে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিজ্ঞ বিচারক জনাব মো. তানভীর আহমেদ আসামির উপস্থিতিতে (হাজতি) এ রায় ঘোষণা করেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত তানভীর নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলার হরিপুর গ্রামের মৃত হাতেম আলীর ছেলে। ঘটনার সময় ঘাতক পাবনা ফায়ার সার্ভিস স্টেশন মসজিদের পেশ ইমাম ছিলেন।
আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর গোলাম সরোয়ার খান জুয়েল বলেন, ২০২০ সালের ৩১ মে গভীর রাতে টাকা পয়সা ও স্বর্ণালংকার লুটের জন্য তানভীর তার পালক (তৎকালে ঘাতক তানভীর ভিকটিমদের বাসায় পালক পুত্রের ন্যায় উঠাবসা করতেন) বাবা, মা ও বোনকে ধারালো অস্ত্রের সাহায্যে নৃশংসভাবে হত্যা করে। মামলার তদন্তকালে ঘাতক তানভীর হত্যার কথা স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি প্রদান করে ছিলেন। দীর্ঘ বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে তাকে তিনটি মৃত্যু দণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত।
অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংক কর্মকর্তা আব্দুল জব্বার ও তার স্ত্রী ছুম্মা খাতুন নিঃসন্তান ছিলেন। তারা সানজিদা নামের একটি মেয়েকে দত্তক নিয়েছিলেন। এরপর বাসার পাশের ফায়ার সার্ভিস স্টেশন মসজিদের ইমাম তানভীরকে আরও একটি দত্তক ছেলের মতই আপন করে নেন ওই নিঃসন্তান দম্পতি। তানভীরও তাদের বাবা-মা হিসেবে ডাকতেন। আব্দুল জব্বার ব্যাংক, পোস্ট অফিসে টাকা লেনদেনেও এই ঘাতক তানভীরকে সাথে নিয়ে। সেখান থেকে জব্বারের টাকা-পয়সা ও স্বর্ণালঙ্কারের দিকে নজর পরে তাদের কে হত্যার পরিকল্পনা করতে থাকে।
২০২০ সালের ২৯ মে ছুটি নিয়ে হরিপুর গ্রামের বাড়ি চলে যায় তানভীর। ছুটি শেষ হওয়ার আগে ৩১ মে পাবনা ফিরে আসেন। ওইদিন গভীর রাতে ভিকটিম আব্দুল জব্বারের বাড়িতে অবস্থান নেন তানভীর। রাত ২টার দিকে ঘুমন্ত অবস্থায় আব্দুল জব্বার, তার স্ত্রী ছুম্মা খাতুন ও মেয়ে সানজিদাকে (১২) কুপিয়ে হত্যা করেন। পরে রক্তমাখা কাপড়-চোপড় ধুয়ে নগদ দুই লাখ টাকা, এক লাখ ভারতীয় রুপি ও স্বর্ণের গহনা নিয়ে বাসায় তালা দিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়েন। এ ঘটনায় নিহতের ভাই আব্দুল কাদের বাদী হয়ে পাবনা সদর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। দীর্ঘ বিচারক প্রক্রিয়া শেষে আজ আদালত এ রায় ঘোষণা করেন। এ রায়ের বাদি সন্তুষ্টি প্রকাশ করে বলেন দ্রুততম সময়ের মধ্যেই রায়ের বাস্তবায়ন দেখতে চাই।